গ্রামের বৃষ্টি
গ্রামের নাম ছিলো শিউলি। সবুজে মোড়া এ গ্রামে মাটির ঘর আর খড়ের ছাউনি ছিল প্রধান বাসস্থান। গ্রামের প্রতিটি কোণে ছিলো প্রকৃতির ছোঁয়া, কোথাও ধানক্ষেত, কোথাও সরিষা ফুলের হলুদ দোল। পুকুরের ধারে পদ্মফুলের বাহার, শিশুরা সেখানে খেলাধুলা করতো। বিকেলের সূর্য তার সোনালী আলোয় গ্রামটিকে আরো সুন্দর করে তুলতো।
শিউলির পুকুরপাড়ে বসে ছিলো ছোট্ট মেয়ে ফুলমণি। পুকুরের জলে পদ্মফুলের প্রতিচ্ছবি দেখে সে মুগ্ধ। পাশেই ছিলো তার বন্ধুরা, তারা জলে পা ডুবিয়ে হাসিঠাট্টা করছিলো। ফুলমণির মনে হলো, এ গ্রামের মতো সুন্দর আর কিছু নেই। বিকেলের সোনালী আলোয় স্নান করা গ্রামটা যেন তার নিজের রূপে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
ফুলমণির মা তাকে ডেকে বললো, "ফুলমণি, ঘরে আয়, তোর বাবা এসেছে।" ফুলমণি ছুটে ঘরে গেলো। তার বাবা তার জন্য কিছু মিষ্টি এনেছে, যা খেয়ে ফুলমণির মুখে হাসি ফুটলো। এ গ্রামের মানুষগুলো ছিলো অনেক সহজ-সরল। তারা একে অপরের সাথে ভালোবাসায় বাঁধা।
গ্রামের বিকেলগুলো ছিলো ঠিক এমনই। প্রতিদিনের কাজকর্ম শেষে সবাই একসাথে বসতো, গল্প করতো, হাসি-ঠাট্টায় মেতে উঠতো। শিশুরা পুকুরপাড়ে খেলা করতো, বড়রা চা খেতে খেতে গল্প করতো। সূর্যাস্তের সময় পুরো গ্রামটা যেন নতুন রঙে রাঙা হয়ে উঠতো।
ফুলমণি যখন পুকুরপাড়ে বসে সূর্যাস্ত দেখছিলো, তখন তার মনে হলো, এই মুহূর্তগুলোই জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত। গ্রামের প্রকৃতির এই সরলতা, মানুষের এই ভালোবাসা, সবকিছু মিলিয়ে শিউলি গ্রামের বিকেল ছিলো স্বপ্নের মতো সুন্দর।